২৫ মার্চ, ২০১২

রাগকে সংযত করা



জীবনে আমি নিজের যেই আচরণের কারণে অনেক বেশি করে আফসোস করেছি, তার মধ্যে রাগ জিনিসটা একদম উপরের দিক অবস্থান করে। জীবনের বিশাল একটা সময় রাগ হলে অসহায় হয়ে যেতাম, আমি চাইনা এমন কাজগুলো ধুম করে করে বসতাম, আর ফলাফলগুলোকে সামলাতে সামলাতে ভালো সময় পার হয়ে যেতো। রাগ করে এমন আচরণ হয়ে যায় যে -- প্রিয়জন/বন্ধুদের সাথে সম্পর্কে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়। অনেকে সহজেই আরো যা করেন তা হলো গ্লাস ভাঙ্গা, খাতা ছিঁড়ে ফেলা, কলম জানালা দিয়ে ফেলে দেয়া। 

২৪ মার্চ, ২০১২

আমাদের সমস্যা আধ্যাত্মিকতায়


"আমাদের সমস্যা হলো আধ্যাত্মিকতায়। যদি একজন মানুষ আমার সাথে মুসলিম বিশ্বে কী কী পুনর্গঠন করা প্রয়োজন সেই বিষয়ে কথা বলতে আসেন, অথবা রাজনৈতিক কৌশল সম্পর্কে এবং অনেক বড় কোন ভৌগলিক কৌশলগত পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলতে আসেন, তার প্রতি আমার প্রথম প্রশ্ন হবে তিনি ফজরের সালাত সময়মত আদায় করেছেন কিনা।" -- সাইদ রমাদান [১৯২৬-১৯৯৫]

২২ মার্চ, ২০১২

বিজ্ঞাপন : ডিসটার্ব

আমি টেলিভিশন দেখি কালেভদ্রে। মূলত পেশাগত জীবনের ব্যস্ততা এবং জীবনে ভালোলাগা-মুগ্ধতার বিষয়সমূহ বদলে উন্নত হওয়ায় বিনোদনের সকল পর্যায়ে টেলিভিশনের অস্তিত্ব আমার জীবনে একদমই নেই এখন। ক'দিন আগে এশিয়া কাপে বাংলাদেশের খেলা দেখতে বসেছিলাম। বিটিভিতে খেলা সম্প্রচারে অর্থায়ন করেছে বাংলালিংক। তাই প্রতি ওভারের বল শেষ হলেই বিজ্ঞাপন বিরতি হচ্ছিলো।

১১ মার্চ, ২০১২

স্বাপ্নিক কথন

একটা ফুলের নাম বলো
-- গোলাপ, সাদা গোলাপ।
একটা পাখির নাম বলো, যার রঙ ভালো লাগে
-- ফিঙ্গে, কী কোমল রঙ তার !
একটা সবুজতার নাম বলো
-- পদ্মপাতা
আকাশ ভালো লাগে তোমার?
-- ভীষণ ! যখন মেঘগুলো ছুটে ছুটে যায়
তুমি না অপেক্ষায় আছ?
-- হুমম! সেই-ই তো!


কষ্ট পেলে কী ভাবো?
-- এ আমার পরীক্ষা। ধৈর্য্যশীলদের সাথে তিনি থাকেন, তাই ধৈর্য্যকে ধারণ করতে চাই।
হঠাৎ অশান্তি লাগে না বুকে?
-- লাগে তো ! প্রায়ই লাগে।
তখন কী করো তুমি?
-- এই তুমি জানো না বুঝি? তার স্মরণেই তো আত্মা শান্তি পায়। প্রিয় বইটার ১৩ : ২০ দেখে নিয়ো আরেকবার। স্মরণ করতে থাকি।
মাশাআল্লাহ! তুমি রাতের নির্জনতা পছন্দ করো?
-- উমম... শেষ রাতেরটা! অযু করে মনটা একাগ্র করে পাই।

তোমার উপরে অনেক চাপ পড়লে, দিশেহারা হয়ে যাও না?
-- একটু তো লাগেই! কিন্তু আমি তো জানি সাধ্যের অতিরিক্ত কিছু চাপানো হয়নি। চেষ্টা করতে থাকি তাঁর কাছে প্রার্থনা করতে করতে
বৃষ্টি ভালো লাগে?
-- বৃষ্টি শেষে গাছের ডালে ঝাঁকি দিয়ে দেখেছো? পানি ঝরে পড়ে কীভাবে!
বাহ! তুমি কি পিচ্চিদের ভালোবাসো?
-- ভীষণ! ওদের সাথে মিশে গিয়ে নিস্পাপ জীবনটাকে অনুভব করতে চাই।
সুবহানাল্লাহ! আচ্ছা, তুমি স্বপ্ন দেখো?
-- দেখিনা আবার? মা-বাবা আর তোমার হাত ধরে সাথে আমাদের পিচ্চিগুলোকে ওই সুন্দর লেকের উপর দিয়ে বাগানে আমরা হাঁটবো অনন্তকালের আনন্দে -- অমন কিছু স্বপ্নই তো প্রেরণা দেয় আমাকে!
মাঝে মাঝে লাল গোলাপ চলে?
-- (হেসে ফেলে) বারে! সাদা ভালো লাগে শুভ্রতার জন্য। লালের মাঝে থাকে ভালোবাসার গভীরতা।
মানুষকে কোন উপহার দিতে পছন্দ করো?
-- সবচাইতে বেশি করে দুআ করি। আর অন্য কিছুই তো এই দুনিয়া ওই দুনিয়া দুটোকেই স্পর্শ করেনা!
কেউ ভুল করে ক্ষমা চাইলে?
-- ক্ষমা করে ফেলতে চাই। ভুলেও যেতে চেষ্টা করি। কষ্ট লাগে, তবুও। কারণ আল্লাহ তো তাহলে আমাকে ক্ষমা করে দিবেন। আমার জীবনেই কী কম ভুল? সূরা শুআরার ৩৭-৪০ পড়েছ না?
সুন্দর ভাবনা তো! আচ্ছা, সংসার নিয়ে ভেবেছ?
-- টোনাটুনির সংসারই আমার পছন্দ।
রাগ হলে কী করো?
-- কথাই বলিনাহ। চুপ করে দূরে সরে থাকি।
(মুচকি হেসে) ভালো থেকো। তোমার জন্য একটু চাইবো
-- (ফিক করে হেসে ফেলে) আমিও তো ! আল্লাহ হাফিয!
আল্লাহ হাফিয

* * * * * * *
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ কথপোকথনের পুরোটাই কল্পনা। একজন মানুষের মনের একান্ত কল্পনা। বাস্তবতার লেশমাত্র নাই :-) 

৬ মার্চ, ২০১২

পৃথিবীটা কার তোমার না আমার বলে দাও


এক গায়কের একটা গানের কথা প্রায়ই আমার কানে আসে পথে ঘাটে। আমার বোন একদিন এই গানটা গুনগুন করেছিলো বলে ওকে বিব্রত করার একটা সুযোগ পেয়েছিলাম। ডেকে জিজ্ঞেস করলাম, "আচ্ছা, গানের এই লাইনটার মানে বলতো?" বেচারী প্রথমে আমার প্রশ্ন শুনে হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলো কিছুক্ষণের জন্য। কারণ সে চিন্তা করতে গিয়ে দেখলো যে গায়কের চিৎকার করে বলা এই কথার বিশেষ কোন মানে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। এইটা যে আদৌ কোন প্রশ্ন হতে পারে, তাও আবার সেইটা গানে গাওয়া যেতে পারে নাকি যে "পৃথিবীটা কার তোমার না আমার বলে দাও"। 

৩ মার্চ, ২০১২

টুকরো টুকরো ভালোলাগা - ২


আমার জীবনে আঁটঘাঁট বেঁধে করা প্ল্যানের পরিমাণ হয়ত কয়েকশত হয়েছে। কোন কাজই কোনদিন শেষ হয়নি এবং কখনো আমার মনেও হয়নি আমি কিছু করতে পেরেছি। ইদানিং পুরোনো অনেক কিছু ঘাঁটতে গিয়ে দেখি একটা উল্লেখযোগ্য কিছু একটা হয়েছে, অন্তত সেটা শূণ্য না। একটু চিন্তাভাবনা করে যা আবিষ্কার করলাম তা হলো -- আমার মতন দুর্বল আর এলোমেলো আর ক্ষুদ্র মানুষের দ্বারা যা অর্জন এসেছে তার পেছনে উদ্দীপনা আর আন্তরিকতা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়াই ছিলো অন্যতম প্রধান কারণ। আমার বিশেষ কোন যোগ্যতা ছিলো না। আল্লাহ আমার ছোট ছোট কাজের ওই ইচ্ছেগুলোকে রহম করে একটা কিছু দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন। আর আমার মতন এরকম কাজ যে কেউ-ই করতে পারে, পারতো, পারবে ইনশাআল্লাহ।

একটা জিনিস কো-রিলেট করলাম, মানুষের নিয়্যাহ বা intention ঠিক থাকলে আর কাজে লেগে থাকলে আসলেই অনেক অনেক অনেক বড় অ্যাচিভমেন্ট সম্ভব। পৃথিবীর বুকে সফলতাগুলো মূলত এই মুজাহাদা বা একনিষ্ঠভাবে আন্তরিকতার সাথে লেগে থাকার সাথে সমানুপাতিক। একইভাবে, জান্নাত অনেক কঠিন টার্গেট হলেও, নিজ নিজ ক্ষুদ্র যোগ্যতায় পূর্ণ আন্তরিকতাতে লেগে থাকলে একদিন সেটাও অ্যাচিভ হবেই ইনশাআল্লাহ। কেননা, সমস্ত সৃষ্টিই এক আল্লাহর। তিনিই সমস্ত ক্ষমতার একচ্ছত্র অধিকারী। আর তিনি অন্তরটাই দেখেন। কাজের ভলিউম বা অ্যামাউন্টের দিকে না, বরং একাগ্রতা আর ইচ্ছার হিসেবেই তিনি বিনিময় দেন, দিবেন।

মাঝে মাঝে নিজেকে যখন খুব অযোগ্য আর ভুলেভরা অবাঞ্ছিত বলে মনে হয় -- তখন এই কাজগুলো চোখের সামনে হাজির করলে এমন একটা ন্যুনতম প্রেরণা পাওয়া যায়, যা ঘুরে ফিরে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের প্রতি কৃতজ্ঞতাবোধে আবিষ্ট হবার বার্তা বয়ে আনে। আর এই কৃতজ্ঞতাবোধ বাস্তবতাময় কঠিন জীবনে বেঁচে থাকার প্রেরণা যোগায়, ভালোবাসতে আর ভালোবাসা ছড়িয়ে দিতে শেখায়। আল্লাহ আমাদের সবাইকেই কৃতজ্ঞ বান্দা হবার যোগ্যতা দিন।