২৮ সেপ, ২০১৩

আপনার বর্তমান অবস্থানের কারণে গর্ববোধ করবেন না

"পৃথিবীর ক্ষমতাশালী রাজাদের প্রত্যেকেই একসময় কান্নাকাটি করা একটা শিশু ছিলো, প্রতিটি বিশালাকার ভবন একসময় ছিলো কেবলই একটি নকশা। আপনি আজকে কী, সেটা খুব বেশি গুরুত্বপুর্ণ বিষয় নয়; সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ হলো আগামীকাল আপনি কোথায় থাকবেন। কখনো, কোনভাবেই আপনার বর্তমান অবস্থানের কারণে গর্ববোধ করবেন না। ভেবে দেখুন, দাবা খেলা শেষ হবার পরে রাজাকেও কিন্তু সৈন্যের সাথে একই বাক্সে যেতে হয়।"

আল্লাহ যেন পৃথিবী থেকে আমাদের বিদায়ের পরে জান্নাতের বাগানসমূহের একটি বাগানে স্থান করে দেন এবং জাহান্নামের আগুনে দগ্ধ হবার হাত থেকে আমাদেরকে রক্ষা করেন।

[সংগৃহীত; ইংরেজি থেকে অনুবাদকৃত]

যে মানুষটাকে ভালোবাসি তাকে আমাদের অবশ্যই বুঝতে হবে

"যে মানুষটাকে ভালোবাসি, তাকে আমাদের অবশ্যই বুঝতে হবে। আমাদের ভালোবাসা যদি হয় কেবল কাউকে দখল করে রাখার কোন চাওয়া, তাহলে তা ভালোবাসা নয়। আমরা যদি শুধু আমাদেরকে নিয়ে চিন্তা করি, শুধু আমাদের প্রয়োজনগুলোই বুঝি এবং অন্যদের প্রয়োজনকে এড়িয়ে যাই, তাহলে আমরা কখনই ভালোবাসতে পারবো না। যাদের ভালোবাসি তাদের প্রয়োজন, চাওয়া, ভালোলাগা এবং কষ্টগুলো আমাদেরকে অবশ্যই গভীরভাবে খেয়াল করতে। এটাই প্রকৃত ভালোবাসার পথ। আপনি যখন কাউকে সত্যিকার অর্থে বুঝতে পারবেন, তখন তাকে ক্রমাগত ভালোবেসে যাওয়া থেকে আপনি নিজেকে ঠেকাতে পারবেন না।"

[যে গ্রন্থ থেকে অনুবাদ : Peace Is Every Step: The Path of Mindfulness in Everyday Life]

২৬ সেপ, ২০১৩

আমাদের মনের জানালা দিয়ে দেখা


একটা গল্প, কিছু কথা, বলে দেয় অনেক কিছুই...
.....

নববিবাহিত দম্পতি নতুন বাসা নিয়েছে। পরদিন সকালে তারা যখন নাশতা করছিলো, মেয়েটি জানালা দিয়ে পাশের বাড়ির দিকে তাকিয়ে দেখতে পেলো কাপড় শুকাতে দিয়েছে ঘরের কর্ত্রী। সে বলে উঠলো,
- 'কাপড়টা পরিষ্কার হয়নি, ঐ বাসার মহিলা ভালো করে কাপড় ধুতে জানেনা। তার মনে হয় ভালো কোন কাপড় কাচার সাবান দরকার।" মেয়েটির স্বামী সেদিকে তাকালো, কিন্তু নিশ্চুপ রইলো।

যতবারই পাশের বাড়ির মহিলাটি কাপড় শুকাতে দিতো, ততবারই এই মেয়েটি একই মন্তব্য করতো।

মাসখানেক পরে সেই বাড়িতে সুন্দর পরিষ্কার কাপড় শুকানোর জন্য ঝুলতে দেখে মেয়েটি অবাক হয়ে তার স্বামীকে বললো,"দেখো, অবশেষে উনি শিখেছেন কীভাবে ঠিকভাবে কাপড় ধুতে হয়। আমি তো ভাবছি কে তাকে শেখালো!!"
তখন ছেলেটি বলে উঠলো, "শোনো, আজ ভোরে আমি আমাদের জানালার কাঁচ পরিষ্কার করেছি!"

.....

আমাদের জীবনটাও এমনই --

"আমরা কোন কিছু দেখার সময় যা দেখি তা নির্ভর করে আমাদের সেই জানালার পরিচ্ছন্নতার উপর যা দিয়ে আমরা দেখি। কোন সমালোচনা করার আগে আমাদের নিজের মনের অবস্থাটা খেয়াল করে নেয়া প্রয়োজন, নিজেদেরকে প্রশ্ন করা দরকার যে আমরা কি তার মাঝে কোন ভালো দেখতে চাই আদৌ? নাকি মানুষটার দিকে তাকাচ্ছি তার ভুলগুলো খুঁজে পেতে বিচার করবো বলেই।"

সবাই তো পড়লাম... আসুন তা নিজেদেরকে স্মরণ করিয়ে দিই।

[শাইখ যাহির মাহমুদের ফেসবুক পেইজের পোস্ট থেকে ভাষান্তর]

২৪ সেপ, ২০১৩

যদি কিছু ভালো না লাগে, অস্থির লাগে তাহলে কিছু আইডিয়া

কিছু কিছু সময় আছে যখন 'কেন যেন ভালো লাগতেসেনা' টাইপের ফিলিং হয়। বয়ঃসন্ধিকালে যখন এরকম হতো, তখন বইপত্র ঘেঁটে এইটার কারণ উদঘাটন করতে গিয়ে পড়ে নিজেকে বুঝ দিয়েছিলাম যে এখন আসলে শরীর-মনে পরিবর্তন আসছে তাই একটু মন খারাপ/উদাস হতেই পারে। সমস্যা সমাধান হয়নি, বরং সময়ের সাথে সাথে প্রকট হয়েছিলো। ভার্সিটি লাইফে উপলব্ধি করলাম হল জীবনটা হলো সুতোকাটা ঘুড়ির মতন, এখানে 'কী যেন নেই' অনুভূতি আরো বেড়ে গিয়েছিলো। আশেপাশে সবাইকে দেখে টের পেতাম, এরকম অনুভূতিকে খুব কম ছেলেই আলাদা ধরতে পারত, কিন্তু পালিয়ে বাঁচতে তাস খেলা, কম্পিউটার গেমস, মুভি দেখা টাইপের অর্থহীন সময় নষ্টের কাজের মাঝেই 'এন্টারটেইনমেন্ট' খুঁজে নিতো, কিন্তু কখনই অন্তরের শূণ্যতা দূর করতে পারত না কেউ। মনের সাথে সামনে দাঁড়িয়ে বোঝাপড়া করার সাহসটাই বেশিরভাগ মানুষের থাকে না, মনকে তখন 'চিন্তা এড়িয়ে' যেতে দেয় সবাই। সমস্যার সমাধান তখন আর হয়না ।

প্রেম করা এবং ছ্যাঁকা খাওয়া জীবনগুলোর কথা

ভার্সিটি জীবনে অনেককে 'ছ্যাঁকা' খায়। ছ্যাকার আগে তো প্রেম হতে হয় -- আমাদের সময়ের বেশিরভাগ প্রেমের সূত্রপাত ছিলো কলেজ লাইফের কোচিং সেন্টারগুলোতে, নইলে কলেজে পড়ার সময় কোন এক 'কাজিনের বান্ধবী' টাইপের জায়গা থেকে। অথবা, 'ফোন' নাম্বার পেয়েছিলো কোন বন্ধুর কাছে -- সেই জিনিস থেকে কথা বলতে বলতে প্রেম। কিছুদিন এইসব প্রেম চলে দুর্দান্ত মুডে। ক্লাস থেকে বের হয়েই কানে ফোন নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে রুমে ফেরা। সব বন্ধুরা একসাথে হল থেকে বের হয়ে যখন নাশতা করতে বের হয়, তখন 'প্রেমিকরা' কানে ফোন নিয়ে পেছনে থাকত। এই দৃশ্য সার্বজনীন, সকল ভার্সিটিতে, সকল সেমিস্টারের ছেলেপিলেদের মাঝে এখনো এমন দৃশ্য আছে বলে মনে হয় আমার।

ইদানিং দেখতে পাই ঢাকার রাস্তায় ব্যস্ত পথেও কিছু ছেলেমেয়ে ফোনে কথা বলতে বলতে পার হয় এবং তারা কথাতে এতটাই ডুবে থাকে যে খেয়ালই করে না বড় গাড়িগুলোকে, তারা কেবল আল্লাহর প্রচন্ড দয়ার কারণেই দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যায়। এইসব ছেলেমেয়েদের পথচলতে চারপাশের ব্যাপারে উদাসীন অথচ হাসিমুখ দেখে আমার কেন যেন মনে হয় অন্য প্রান্তে বিপরীত লিঙ্গেরই কেউ আছে হয়ত। তাদের মাঝে হারাম সম্পর্কের জোয়ার বইছে, শয়তান তাদের অনুভূতিতে বেশি করে উচ্ছ্বাস মাখিয়ে দিচ্ছে, ফলে এই ভালোবাসার নেশার মাতলামিতে ডুবে থাকছে তারা।আবেগের ভাগাভাগি, কিছু স্বপ্ন আর খুঁনুসুঁটি তো আনন্দেরই বটে! কিন্তু নদীতে তো জোয়ার হলে ভাটাও আসে, অনৈতিক সম্পর্কের উদ্দাম আনন্দের জোয়ার পেরিয়ে প্রেমে ভাটার টান আসে, সে টান তারা সামলাতে পারে না। সে টানে দু'জনাই ভেসে যায়, একদম হারিয়েই যায় বেশিরভাগ সময়েই। এই ভাটারই ফল ছ্যাঁকা খাওয়া। সুস্থ-স্বাভাবিক এক যুবক হতাশা আর উচ্ছন্নতাকে আলিঙ্গন করে নেয় এমন সময়ের পরেই।

আত্মাছেঁড়া কষ্ট

জীবনে কত রকম কষ্টই না হয়! কিছু কিছু কষ্টকে আত্মাছেঁড়া কষ্ট বলা যায়। বুক জ্বলে যায় এমন কষ্টও তো হয়। আসলে, এমন অনুভূতি প্রতিটা মানুষের জীবনেই আছে। সেটা পরিশ্রমের ফল না পাওয়ায় হতে পারে, প্রিয়জনের বিদায়ে হতে পারে, অনাকাংখিত ঘটনা থেকে হতে পারে, আপনজনের বিদায় থেকেও হতে পারে, বড়-ছোট রোগবালাই থেকেও হতে পারে। যেভাবেই হোক, কষ্ট হয়না এমন মানুষ তো আমরা নই।

কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপারটা হলো, কষ্টের ফলাফল কিন্তু একেকজন একেক রকম পায়। যে মানুষটা আল্লাহর জন্য জীবনধারণ করে, সে জানে -- আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা এই দুনিয়া ও সৃষ্টিজগতের মালিক। তিনিই এই কষ্টটা দিয়েছেন, সেই তিনিই আমাকে সুস্থ শরীর দিয়েছিলেন, আমার জীবনে রিযিকের ব্যবস্থা করেছিলেন, করছেন। আমাদের হারানোর কিছু নেই, শুধুই প্রাপ্তি। এই কষ্টের মূহুর্তটাতেও যদি সবর করি, ধৈর্যধারণের ফলস্বরূপ তিনি আমাকে দুনিয়া ও আখিরাতে তার পছন্দানুযায়ী এমন দান করবেন যা আমার কল্পনাতীত। সমস্ত সফলতার মালিক কেবলই তিনি। আমার জীবনের উদ্দেশ্যও কেবলই তার সন্তুষ্টি।

অনলাইনে লেখালেখি

কিছুদিন লেখালেখি থেকে দূরে ছিলাম। জীবনের প্রয়োজনে, নিজের প্রয়োজনে। আমি দীর্ঘ অনেকগুলো বছর ধরে একটানা ফেসবুক ব্যবহার করছি, এমনকি অন্যান্য সোশাল নেটওয়ার্কগুলোও। আধযুগ পরে এসে আমার কাছে একসময় মনে হচ্ছিলো, সম্ভবত ভার্চুয়াল এই লেখালেখির মাঝে বোধহয় তেমন কোন অর্থ নেই, হয়ত অনেকটাই সময়ের সস্তা পচন, আখিরাতের ক্ষতি কামাই তুলনামূলকভাবে বেশি। এটা সত্যি, ভুল এবং ক্ষতিতে ডুবে থাকা মানুষের সংখ্যাই বেশি। তবে আমার চুপ থাকা সময়ে যখন মাঝে মাঝে ফেসবুকে-টুইটারে ঢুঁ দিয়েছি, তখন টের পেয়েছি যে অনেকসময় অনাকাংখিত উৎস থেকে পাওয়া কথাগুলোর মাঝে যে 'রিমান্ডার' বা স্মরণিকা থাকে তা কত বেশি শক্তিশালি হতে পারে। কখনো কখনো ছোট্ট একটা বাক্য চিন্তার জগতে প্রচন্ড ঝড় সৃষ্টি করে।

২০ সেপ, ২০১৩

প্রেমে ছ্যাকা খেয়ে ব্যাঁকা হওয়া মানুষদের কী হবে জীবনে?

তখন সন্ধ্যা হয়ে এসেছে। ঢাবি'র কেন্দ্রীয় মাসজিদে মাগরিবের সলাত আদায় করে শাহবাগে অপেক্ষা করছি বাসের জন্য। ছুটির দিনের সন্ধ্যা, শিশুপার্কে আগত মানুষদের উপচে পড়া ভিড়ে বাসে জায়গা পাওয়ার আশা ত্যাগ করে হাঁটতে শুরু করলাম রমনা পার্ক লাগোয়া ফুটপাত ধরে... একটু নীরব এলাকায় আসতেই এক শক্তপোক্ত যুবককে সামনেই কানে ফোন নিয়ে রীতিমত অস্থিরভাবে ছটফটিয়ে এদিক ওদিক লাফ দিতে দেখলাম। কিছু কথা কানে আসতে একটু ধীরপায়ে হাঁটলাম, কানে এলো --

"ও কেন ছেলের সামনে হাজির হবে? আমি জানতাম, দুপুর থেকেই টের পাচ্ছিলাম যে আজকে ওকে কেউ দেখতে আসবে। শুক্রবারে ওকে দেখতে আসে আমি জানি... ও আমাকে কথা দিসিলো আব্বা-আম্মা ওর সাথে বেঈমানী করবে না। ও কেন তাহলে ছেলেপক্ষের সামনে গেলো। আজকে যদি ওর বিয়ে হয়া যাইত তাইলে যেমন কষ্ট পাইতাম, আমি এখন তেমন কষ্ট পাইতেছি..."

বিয়ে কি এমনই হওয়া উচিত?


আমরা এমন একটা সমাজে বসবাস করছি এখন, যেখানে প্রেম করার জন্য তেমন একটা ইচ্ছা/আগ্রহেরও দরকার পড়েনা, কিছু বুঝে উঠার আগেই তা একেকজনের উপরে আপতিত হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সমস্ত মেয়েরা এই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়। বন্ধুর মাধ্যমে, ফোনে, ফেসবুকের ইনবক্সে কেবলই প্রেমের জয়গান। শ্লোগান শোনা যায়, "যদি বন্ধু হও হাতটা বাড়াও", আর এই হাত বাড়ালেও হলো, তারপরেই পথ খুলে যায় আনন্দের -- শহরের এখানে-ওখানে অজস্র আনন্দ-আবেগের ভাগাভাগি, খুঁনসুঁটি, হাসি-ঠাট্টা-উচ্ছ্বাস প্রকাশ করা যায় আরো অজস্র পথচারীদের সামনেই। আর এই অপার আনন্দকে পেতে কেবল একটা জিনিস লাগে -- "ইচ্ছা"।

কিন্তু এই সমাজেই বিয়ে করার জন্য শত-সহস্র কঠিন ধাপ আছে। সেই ধাপের একেকটা পূরণ না করতে পারলে অপরাধী-আসামী হয়ে যেতে হয় নিকটাত্মীয়-পরিবারের কাছে, সর্বোপরি *সমাজ* নামের প্রতিষ্ঠানটির কাছে। হারাম সম্পর্ক গড়া যতটাই সহজ, হালাল সম্পর্ক করা ততটাই কঠিন।

১৩ সেপ, ২০১৩

একান্ত নিজের জন্য কিছু সময় দরকার সবার

জীবনের কিছু অনুভূতি প্রায়ই চাপা দীর্ঘশ্বাস বের করে তার একটা হলো জীবনের প্রকৃত জ্ঞান কিছুটা শিখে সেই মানদন্ডে নিজের জীবনের পেছনের দিকে এক ঝলক তাকানো... খেয়াল হয়, অনর্থক-অকারণ অনেক সময় যা আসলে আমার কোনই কাজে আসবে না। অনেক আলাপে থাকতে চাইনি, অনেক বিষয় জানতে চাইনি, অনেক মানুষের সাথে মিশতে ভালো লাগেনি তাও থাকতে হয়েছে -- সেগুলো নিয়ে খারাপ লাগে; টের পাই অনেক বেশি দৃঢ় হতে হবে আগামী জীবনের জন্য।

আসলে আল্লাহর একজন বান্দা হবার বিষয়টাতে অনেক কিছু ভাবতে হয় না -- শুধু প্রতি মূহুর্তে, ঠিক প্রতিটা ক্ষণে মনে করার চেষ্টা যে এতে কি আমার আল্লাহ খুশি হবেন? খুব বেশি জ্ঞান লাগে না, যেকোন মূহুর্তে, যে কেউ আমরা শুরু করতে পারি, এরপর তিনি ডেকে নেয়া পর্যন্ত তারই কাছে যাবার চেষ্টা -- এতেই এই জীবনের সফলতা। একদিন কেউ থাকবে না, কেউ থাকেও না। পড়ে থাকবে আমার সুন্দর পোশাক, ভালোবাসার মানুষগুলো, আমি চলে যাব মাটির নিচে। পড়েছিলাম একজন ওস্তাদ তার ছাত্রকে শিখিয়েছিলেন, "মাটিকে অবজ্ঞা করো না। তুমি যখন বেঁচে থাকো তখন সে তোমার পায়ের নিচে থাকে, যখন তুমি মরে যাবে তখন সে তোমার উপরে থাকবে।" -- কথাটা পড়ে ধাক্কা খেয়েছিলাম।

স্রেফ কিছু সম্ভাবনার কথা

অনেক সম্ভাবনার কথা মনে হয় মাঝে মাঝে, স্রেফ কিছু সম্ভাবনার কথা। আমাদের মাঝে একটা অদ্ভুত সত্ত্বা আছে যে বিচারকের আসনে বসতে পছন্দ করে, মানুষ পেলেই তাকে বিচার করে একটা গ্রুপে/দলে/টাইপে ভাগ করে ফেলতে চায়। নিজে একটু দ্বীন সুন্দর করে পালন করতে পারলে যদি এমন মানুষ পাই যে হয়ত ইসলাম পালনে আগ্রহী, তার বেশভূষা এবং মুখের ভাষায় সেইরকমের কিছু আহামরি পাওয়া না গেলে তাকে আমরা হয়ত গুণতিতেও ধরতে চাইনা। সামনের মানুষটার অবস্থানের উপরে ভিত্তি করে তার প্রতি আচরণ প্রতিফলিত হয়, বেশিরভাগ মানুষই এমন আমরা।

কতটুকুই বা জানি আমরা? হয়ত সামনের মানুষটা যখন অনেক কষ্টে যুদ্ধ করছে জীবনের, তার দ্বীন পালনের দুর্বলতা হয়ত আমাদের সামনে পরিষ্কার, তখনো হয়ত আমরা মনে করছি অনেক পরিশ্রম করে আমরা বেশ ভালো জায়গাতে এসেছি, জ্ঞানে-গুণে-পার্থিব অবস্থানে। অথচ আল্লাহ হয়ত আমাদের জীবনের বড় পরীক্ষাতে এখনো ফেলেননি। আমি যেই পরীক্ষা পেরিয়ে এসে মনে করছি অনেকদূর এসেছি, সেই মানুষটা হয়ত এর চাইতে বহুগুণ কঠিন অবস্থা পেরিয়ে আছেন। অথচ আমি তার ব্যাপারে সিদ্ধান্তে চলে এলাম। ভেবেই নিলাম আমি তার চাইতে অনেক ভালো মুসলিম। অন্যের প্রতি খড়গহস্ত হওয়ার সময় আমাদের কুরআন এবং হাদিসের জ্ঞানটুকু চুলোয় তুলে রাখতে পছন্দ করি আমরা। অনেক কিতাব বুঝি, আলাপ করি কিন্তু কেবল মানার সময় নিজেকে ভালো মনে হতে থাকে।